Celebration of International Day for the Elimination of Violence Against Women Trough Art Workshop.

As part of the 16-days of Activism, the “Art Workshop” Titled: BATASH CHUTUKH! TUFAN UTUK! DOMBO NA! TAMBO NA! at Cox’s Bazar.

১০ অগ্রহায়ন ১৪২৯/২৫ নভেম্বর ২০২২ শুক্রবার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে “নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস কমিটি” এর মাধ্যমে ৪৬টি সংগঠন একত্রিত হয়ে দিবসটি পালন করতে যাচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য: “বাতাস ছুটুক! তুফান উঠুক! দমব না, থামব না।” তাই আমরা দুঃখ, ক্রোধ এবং ব্যাথা নিয়ে একত্রিত হবো যেন আমরা শক্তি হয়ে এগিয়ে আসতে পারি।

সময়: সকাল৯টা থেকে দুপুর ১২টা, ২৫ নভেম্বর (শুক্রবার)

স্থান: কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, কক্সবাজার।

কার্যক্রম: ঘোষণাপত্র পাঠ, শ্লোগান ও প্রচারপত্র বিতরণ, গ্রুপ আর্ট ওয়ার্ক এবং পেপার আর্ট।

আয়োজনে: সাদা এবং সহযোগীতায় নারীপক্ষ, জীবন গঠন উন্নয়ন সংস্থা ও শক্তি 

১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডোমিনিক্যান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী সরকার বিরোধী মিরাবেল ভগিনীত্রয়কে সেনা সদস্যরা ধর্ষণ ও হত্যা করে। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকান ও ক্যারিবিয় নারী সম্মেলন এই হত্যাকান্ডকে স্মরণ করে ২৫ নভেম্বরকে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করে। ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর উইমেন্স গ্লোবাল লিডারশীপের এক প্রশিক্ষণে ২৩টি দেশ থেকে আগত অংশগ্রহণকারীগণ নারী নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘন- এই চিন্তার ভিত্তিতে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব করেন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে এযাবৎ ১৮৭টি দেশে ছয় হাজারের বেশী সংগঠন ১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অভিযানে অংশগ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্যাপন কমিটি’ ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিবছর একেকটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালন করছে। এবারের প্রতিপাদ্য “ বাতাস ছুটুক! তুফান উঠুক! দমব না, থামব না।”

নারীর উপর সহিংসতার ধরন ও মাত্রা ভয়াবহ। পরিবার থেকে রাষ্ট্র, সংসার থেকে সমাজ, কারখানা থেকে শিল্প, দোকান থেকে বাজার, ইত্যাদি প্রতিটি পর্যায়ে নারী বৈষম্য ও নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়। তথাপি, এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই নারী সর্বত্র তার সাফল্যের প্রমাণ রাখছে। পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহন থেকে খেলার মাঠে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিয়ে বিজয় অর্জন করছে তারা। ক্ষেত-খামার, কল-কারখানা, রাজনীতি, প্রশাসন ও বিচারবিভাগসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রে, সকল স্তরে নারীর অংশগ্রহণ প্রতিষ্ঠিত। পরিবার এবং স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। নারীর এই অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে নিশ্চিত করতে হবে সহিংসতামুক্ত নারীর জীবন।

নারীর উপর সহিংসতা কেবলমাত্র কোন ব্যক্তির একক বা বিচ্ছিন্ন আচরণ নয়, এর মূলে রয়েছে নারীকে অধস্তন, ও পুরুষের ভোগ্যবস্তু এবং সন্তান জন্মদানের যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা- সর্বোপরি তাকে মানুষ হিসেবে গণ্য না করা। এই চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি, নিয়ম ও আইন-কানুন এবং দুর্নীতি ও বিচারহীনতার চর্চা নারীর উপর সহিংসতাকে দিনকে দিন বাড়িয়েই চলেছে। নারীর উপর সহিংস আচরণ যে বা যারাই করুক, যেখান থেকেই আসুক, এর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে, ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নারীবিদ্বেষী সংস্কৃতি, সমাজচিন্তা এবং নারীর স্বার্থ বিরোধী সকল আইন ও নীতিমালা পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে একক ও সম্মিলিতভাবে ব্যক্তি, সমাজ ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। সহিংসতামুক্ত নারীর জীবন নিশ্চিত করতে আমাদের সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।

জাতীয় সংসদের কাছে দাবিঃ

• নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার করতে প্রচলিত দুর্বল বা ত্রুটিপূর্ণ আইনের সংস্কার এবং যুগোপযোগী নতুন আইন দ্রুত প্রণয়ন করুন।

• প্রচলিত আইনে সহিংসতার শিকার নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানসমূহ অনতিবিলম্বে বাতিল করুন এবং নারীর প্রতি অসম্মানজনক শব্দ-বাক্য প্রয়োগসম্বলিত রাষ্ট্রীয় দলিল-দস্তাবেজ সংশোধন করার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন।

সরকারের কাছে দাবিঃ

• নারীর উপর যেকোন ধরনের সহিংসতা সংক্রান্ত সকল প্রকার আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

• নারীর উপর সহিংসতার ঘটনা তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ, চিকিৎসক-সেবিকাসহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন।

• থানা, হাসপাতাল ও আদালতকে নারীর প্রতি মর্যাদাসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

• পাঠ্যসূচিতে নারীর প্রতি অসম্মানজনক ও বৈষম্যমূলক বিষয় এবং ভাষা ও শব্দ বাতিল করুন।

আমাদের করণীয়ঃ

• নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর করা।

• নারীকে ভোগ্যবস্তু নয়, মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজে ভাবা এবং অন্যকে ভাবতে উৎসাহিত করা।

• নারীর উপর সহিংসতাকে উপেক্ষা না করে এর বিরুদ্ধে অনমনীয় ও জোরালো সামাজিক অবস্থান তৈরি করা।

• সহিংসতার শিকার নারীকে প্রয়োজনীয় সকল সেবা পেতে সাহায্য করা এবং ঘটনা আড়াল বা গোপন না রেখে প্রকাশ করতে সাহস যোগানো।

• সহিংসতার শিকার নারীকে দোষারোপ না করা এবং অন্য কেউ করলে সাথে সাথে প্রতিবাদ করা।

আমরা কিছুতেই দমে যাব না, নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই জারি আছে, থাকবে। এই লড়াইয়ে আপনি নিজে যুক্ত হন এবং অন্যকে যুক্ত করুন।