আপনি কি খুব বেশি রেগে যান? রেগে গেলে ভাঙচুর করেন? কাছের মানুষদের সাথে অশোভন আচরণ করেন?
প্রচলিত আছে, “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন”! কথাটি অনেকাংশেই সত্য। রাগ দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়ই বরং সমস্যা আরো বেড়ে যায়।
“কোনো কিছু না পেলে বা কোনো সমস্যায় পড়লে বা কোনো কিছুর ক্ষতি হলে মানুষ যদি অন্য কাউকে দোষারোপ করার সুযোগ পায় তখন তাঁর উত্তেজিত মানসিক অবস্থাকেই রাগ/ক্রোধ বলে।“
রাগের মাথায় মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, হার্ট ফেল করতে পারে, স্ট্রোক করতে পারে বা এমনকি মানুষকে খুন পর্যন্তও করতে পারে।
সুতরাং চলুন জেনে নেই রাগ নিয়ন্ত্রনের কিছু পদ্ধতিঃ
- রাগান্বিত অবস্থায় মানুষের সাথে তর্কে জড়াবেন না। আপনি কোন কথা বা তর্কে না জড়ালে এই রাগ বেশি সময় স্থায়ী হবে না, ধীরে ধীরে কমে যাবে কারণ মানুষ একা একা বেশিক্ষণ রাগ করতে পারে না।
- আপনি রেগে গেলে কোনো শান্ত পরিবেশে যেয়ে গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিন। এটি আপনার ভিতরে জমে থাকা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাতে ঘুমের সময় সকল ডিভাইস বন্ধ করে রাখতে হবে। তা না হলে সকালে উঠে শরীর খারাপ হবে এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকবে। সাধারনত, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ২৪ ঘন্টায় সর্বনিম্ন ৬ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে বলে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
- কোনো কিছু বলার আগে ভাবুন। রাগের মাথায় আমরা অনেককিছু বলে ফেলি যেটা একদমই বলা সমীচীন নয়। তাই রেগে গিয়ে কিছু বলার আগে একটু সচেতন হওয়ার চেষ্টা করুন।
- আপনি ঠান্ডা মাথায় একটু চিন্তা করে দেখুন রাগ করার ফলে আপনার কোনো লাভ হয়েছে কিনা? উত্তর নিশ্চই না। কারণ রাগ আমাদের পরস্পরের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করে এবং সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। ফলে আপনি নিজেও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
- গান আপনার মনকে শান্ত করে পাশাপাশি অন্যদিকে আপনার মনকে ডাইভার্ট করতে সহায়তা করে। সুতরাং, যখনই আপনি রেগে যাবেন তখনই আপনার পছন্দের গানগুলো শুনতে পারেন।
- যার উপর রেগে আছেন তার জায়গায় নিজেকে ভাবুন। হয়তো সে ঠিকঠাক মত আপনার কাজটি করে দিতে পারেনি। আপনি যদি তাকে আরেকবার বুঝিয়ে দেন সে হয়তো কাজটি ভালভাবে করে ফেলতে পারবে। তাই দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর চেষ্টা করুন।
- ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। সুতরাং কারো উপর রেগে থাকলে তাকে ক্ষমা করে দিন। দেখবেন আপনি মানসিকভাবে অনেক প্রশান্তি পাচ্ছেন।

রাগ অন্যান্য আবেগের মতই একটি স্বাভাবিক আবেগ। তবে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরী। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন এবং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হোন। সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আপনাকে অবশ্যই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।